1. news@bijoytv24.news : বিজয় বাংলা টিভি : বিজয় বাংলা টিভি
  2. info@www.bijoytv24.news : বিজয় টিভি ২৪ :
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন

পটুয়াখালী হোমিওপ্যাথিক কলেজের ডা. ফিরোজ আহমেদের বিরুদ্ধে অভিনব কৌশলে অধ্যক্ষের চেয়ার দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টারঃ
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী দুঃশাসনে অফিস সহকারী থেকে সরাসরি প্রভাষক এবং আওয়ামী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ পদে বসেন ডা. ফিরোজ আহমেদ। গত ৫ই আগষ্ট স্বৈরশাসক পতনের পর ছাত্র আন্দোলন সদস্যদের নামে বহিরাগতদের দিয়ে অধ্যক্ষ ডা. বজলুর রহমানকে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে সই রেখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চেয়ার দখল করেন পটুয়াখালী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ডা. ফিরোজ আহমেদ এ অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, বিএইচএমএস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. বজলুর রহমান ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই শিক্ষক হিসাবে সঙ্গে ছিলেন। ২০১৮ সালে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী ২০২৬ সালে অবসরে যাওয়ার কথা এ প্রবীণ অধ্যক্ষের। কিন্তু এরই মধ্যে ডায়াবেটিস সহ চোখের সমস্যা ধরা পরলেও তিনি কোনভাবেই দৃষ্টিহীন নয়। ইচ্ছে ছিল যৌবন থেকে লেগে থাকা প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেষ মুহূর্তে সকলকে বেদনাদায়ক আনন্দ দিয়ে অবসরে ফিরবেন। কিন্তু স্বৈরশাসক পতনের পর ২৪শে আগষ্ট অফিস চলাকালীন হঠাৎ করে ডা. ফিরোজ আহমেদ ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের নামে বহিরাগতদের ডেকে এনে অধ্যক্ষ ডা. মোঃ বজলুর রহমানকে দৃষ্টিহীনতার অজুহাত সম্বলিত পদত্যাগপত্রে জোর করে সই করে নেন।

এ ঘটনা পুরো জেলা জুড়ে হইচই সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় প্রকাশিত হয়। এ কাজে ডা. ফিরোজকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন একই প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেমা আক্তার রুমা ও ট্রেজারার জান্নাতুল ফেরদৌসী কাজল।
এছাড়াও জানা যায়, ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেয়ায় অধ্যক্ষ ডা. মোঃ বজলুল রহমান ২৫শে আগষ্ট পটুয়াখালী সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ডা. ফিরোজ আহমেদ, ডা. নুরুজ্জামান, ডা. মানিক দত্ত সহ অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে বিবাদী করা হয়। এছাড়াও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর জোরপূর্বক গৃহীত পদত্যাগ পত্র বাতিল করে পুনরায় চাকরিতে গ্রহণের ব্যবস্থার জন্য আবেদন করেন।

ডা. ফিরোজ আহমেদ সম্পর্কে জানা যায়, কর্মজীবনে ২০০২ সালে ঝালকাঠি ফিরোজা আমু হোমিওপ্যাথিক কলেজে হাসপাতাল শাখার অফিস সহকারী পদে যোগদান করেন। ২০১২ সালে পটুয়াখালী কলেজে চার বছরের ডিএইচএমএস কোর্সে ভর্তি হন। একই সময়ে চাকুরীরত অবস্থায় ৭০ কিঃমিঃ দূরত্বের ভিন্ন কলেজে শিক্ষার্থী হয়ে ২০১৬ সালে কিভাবে নিয়মিত ক্লাস করে পাশ করলেন এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে! ২০১৬ সালে তার ইন্টার্নি চলাকালীন একাডেমিক শাখায় প্রভাষক হিসেবে যোগদান দেখানো হয় যা পরবর্তীতে ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বারের মতো পুনরায় যোগদান করেন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পটুয়াখালী হোমিওপ্যাথিক কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের পর মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ বারেক কে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেধারক মারধর করে যা ঐ সময় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়।

এছাড়াও বিগত দিনে ডা. ফিরোজ প্রতারণা মামলায় ১৫ দিন কারাবরণ করেন। আওয়ামী লীগের মাধ্যমে তদবির বাণিজ্য করে ২০২৪ সালের মে মাসে তিনি জেলা প্রশাসন থেকে একটি আদেশে (ভারপ্রাপ্ত) উপ-অধ্যক্ষ হন তবে এর কোন যোগদান নিয়োগ নাই। একইভাবে জেলা প্রশাসনের আদেশে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চেয়ার দখল করলেও কমিটির পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন যোগদান নিয়োগ নেই।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসাবে অফিস আদেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মহোদয়। অফিস সহকারি যে কেউ থাকতে পারে তবে প্রভাষক হিসাবে আমার নিয়োগ হয়েছে। আমি এত বক্তব্য দিতে পারবো না আপনি যেখান থেকে পারেন জেনে নেন।
অধ্যক্ষ ডা. মোঃ বজলুর রহমান বলেন, আমি এখনো কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে আছি তবে আমার উপর অবিচার করা হয়েছে। আমাকে জোর করে ভয় ভীতি দেখিয়ে পদত্যাগ পত্রে সই করে নিয়েছে।অধ্যক্ষ হিসাবে আমার কাছে প্রতিষ্ঠানের অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু নথি সংরক্ষিত আছে। আমি ডা. ফিরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলমান। কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যদি অধ্যক্ষ না থাকি তবে প্রতিষ্ঠানের সবকিছুই আমি ফেরত দেব।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোঃ আরেফিন বলেন, উভয় পক্ষই আমার কাছে আবেদন করেছিলেন। আবেদন তাদের যথাযথ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরণ করেছি। অধ্যক্ষ হিসেবে কে দায়িত্ব পালন করবেন সেটা তদন্ত করে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিবেন।

বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিলের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডাঃ মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমি জানি তবে এখনো কোনো হার্ডকপি হাতে পাইনি। পটুয়াখালী ডিসি পূর্বের অধ্যক্ষের আবেদন গ্রহণ করেছেন কারণ তাকে যোরপূর্ব পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। সম্ভবত তিনি থানায় জিডি করেছেন। যেহেতু পূর্বের ডিসি মহোদয় নিয়োগ দিয়েছে, যে পরিপ্রেক্ষিতে নিয়োগ দিয়েছেন সেটা যদি সঠিক থাকে তবে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সঠিক থাকবেন কিন্তু আগের অধ্যক্ষের যদি আইনত যৌক্তিক দাবি থাকে তাহলে বিবেচনায় আগের স্মারক ক্যানসেল করে দিতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট