দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ইউরো ও ডলারে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘জিনের বাদশা’ নামে। জানা গেছে, বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন আবু বকর সিদ্দিক। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও চাকরিকালে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন আবু বকর। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ভবনসহ ডজন খানেক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তাকে টাকা দিলেই মিলে যেত দুদকের ‘ক্লিনশিট’। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে তিনি ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। তার দুই ছেলে থাকেন যুক্তরাজ্যে। ঘুষের টাকা সেখানে পাঠিয়ে দেন হুন্ডিতে। আর সেই টাকা ‘রেমিট্যান্স’ হয়ে আবার চলে আসে আবু বকরের কাছে। চলতি বছরের এপ্রিলে বহুল আলোচিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে আবু বকর সিদ্দিকের ঘুষ-বাণিজ্য। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামসুজ্জামান জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে দুদকে থাকা অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তনের কথা বলে আবু বকর দাবি করেন ৬০ লাখ টাকা। ওই টাকা নিয়ে আবু বকরের বাসায় গেলে তিনি টাকা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, সেগুলো ডলার বা ইউরো করে নিয়ে আসতে। শামসুজ্জামান বাধ্য হয়ে ডলারে কনভার্ট করে ৬০ লাখ টাকা দেন আবু বকরকে। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর তার ঘুষ, দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দুদক। বেশ কিছুদিন আগেই একজন পরিচালককে তার বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।