রাজশাহীতে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের বিশাল আয়তনের পুকুর ভরাট করে, সেগুন, মেহগনি সহ, বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ' তাজা বনজ বৃক্ষ কেটে/ নিধনের অভিযোগ উঠেছে।
প্রাণ আরএফএল এর এমন প্রাণঘাতি প্রকল্পে জনমনে তীব্রক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের বিশাল আয়তনের পুকুর ভরাটের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ’ তাজা বনজ বৃক্ষ কেটে নিধন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সুত্র বলছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর এটির ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, খাল ও লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও (২০১০ সালে সংশোধিত) যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ। এমনকি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত গাছ কাটা যাবে না।
জানা গেছে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস ২০২৪ সালের অক্টোবরে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির মাধ্যমে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কাছে ৩০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। চুক্তির পর মিলটির নতুন নামকরণ করা হয়েছে (বরেন্দ্র টেক্সটাইল মিলস)। চুক্তি অনুযায়ী মিলটি পরিচালনার দায়িত্ব পেলেও, এত সংখ্যক গাছ কর্তন ও পুকুর ভরাটের কোনো অনুমতি ছিল কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে পরিবেশবিদরা বলছেন, শত'শত তাজা বনজ বৃক্ষ কাটার ফলে এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে যাবে, বাতাসে কার্বন নিঃসরণ বাড়বে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আমাদের এলাকায় অক্সিজেন ভান্ডার একের পর এক ধ্বংস করা হচ্ছে। বনবিভাগের ২০৫টি গাছ কাটার ধকল সামলানোর আগেই, নতুন করে শত' শত গাছ নিধন করা হলো। এটা অবশ্যই সরকারের অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে।
এ বিষয়ে (প্রাণ-আরএফএল) এর স্থানীয় এজিএম' শরিফ উদ্দিন বলেন, “আমরা পুরো মিল ৩০ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি, সব স্থাপনা ব্যবহার করবো, তাই গাছ কাটা ও পুকুর ভরাটের প্রয়োজন পড়েছে। তবে বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
অন্যদিকে প্রাণ-আরএফএল কর্তৃপক্ষ এর আগে মিলের উচ্চমূল্যের মেশিনারিজ গোপনে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, গভীর রাতে এসব ভারি মেশিন স্থানান্তরের সময় বাধা দিলে পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান করা হয়। পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে আরো গাছ কাটা হলে এলাকার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। পরিবেশ রক্ষা ও টেকসই শিল্পায়নের স্বার্থে এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করা প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটাও এখন দেখার বিষয়। এ ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধ্বংস না করে, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
প্রকাশক ও সম্পাদক : জাহাঙ্গীর আলম বাবু
মোবাইল : ০১৭১১৩১১০৭৪-০১৫৫৬৮১৮৬৮০
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম শেওড়াপাড়া ইকবাল সরণি মিরপুর ঢাকা কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত