1. news@bijoytv24.news : বিজয় বাংলা টিভি : বিজয় বাংলা টিভি
  2. info@www.bijoytv24.news : বিজয় টিভি ২৪ :
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

‎রংপুরে বৈষম্য বিরোধী ২ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদে কারন জানালেন : ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি

শিল্পী আক্তার রংপুর ব্যুরো
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

গতকাল রাতে জাতীয় পার্টি আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার ঘটনায় আমরা মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় মামলার জন্য একটি অভিযোগ দাখিল শেষ করে রাত আনুমানিক ১১.৪০ এর দিকে পায়রা চত্ত্বরের মকবুল হোটেলে সবাই মিলে রাতের খাবার খেতে আসি। খাওয়া শেষে বের হয়ে অপেক্ষা করেছিলাম এনসিপি এর যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ আল গালিফ ভাইয়ের সাথে দেখা করার জন্য। তিনি পায়রা চত্ত্বর চলে এসিছিলেন ইতিমধ্যেই। হটাৎ লক্ষ করে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে দ্রুত গতিতে জাহাজ কোম্পানি মোড়ের দিকে ছুটছে। পাশেই ছিলো জেলা আহবায়ক ইমরান ভাই, সে বলছে জিওসি সাহেব প্রোটকল নিয়ে যাচ্ছে, আমি বল্লাম না এভাবে বড় কোন অভিযানে যাচ্ছে।

‎রাত ১২.১০ মিনিট আমার ফোনে সেনাবাহিনীর ৭২ ব্রিগেড কমান্ডার জনাব হুমায়ুন মহোদয়ের কল,আমি ভাবলাম স্যার হয়তো যাওয়ার পথে আমাকে লক্ষ করেছে তাই কল দিলেন। কল রিসিভ করে সম্বোধন শেষ স্যার জানতে চাইলো কোথায় আছি, জানালাম পায়রা চত্ত্বরে আছি। তিনি জানালেন তিনি আসতেছেন দেখা করবেন। কল কাটার পরই খবর পাই সব আর্মির গাড়ি মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানাতে গিয়েছিলো,ব্যাক করছে শহরের দিকে। তখনই মনে হলো সামথিং ইজ রং। রাত ১২.১৩ এর মধ্যেই স্যার তার গাড়ি বহর নিয়ে পায়রা চত্ত্বরে এসে পৌঁছালেন। কল কনভারসেশনে স্যার খুঁজে নিলেন আমাকে।

‎তখন পুরো পায়রা চত্ত্বর একটা থমথমে অবস্থা হয়ে গেলো, জনমানুষ সরিয়ে দিয়ে পুরো পায়রা চত্ত্বর এলাকা সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়, স্যার আমার হাত ধরে রেখে ভারী কন্ঠে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন।নিজের লোকদের নির্দেশ দেন কেউ যেন ভিডিও করতে না পারে। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে আমাদের বিক্ষোভ মিছিলে হামলার পরে জাতীয় পার্টীর চেয়ারম্যান জিএম কাদেরে বাড়িতে হামলার বিষয়ে তিনি প্রশ্ন করছিলেন, এর লিড যেহেতু আমি দিয়েছিলাম এর দায়ভারও আমাকে নিতে হবে। রাতের মধ্যেই সবাইকে ধরিয়ে দিতে হবে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার জন্য তার সম্মান নষ্ট হয়েছে, রাতের মধ্যেই সবাইকে লাগবে।

‎সেদিনের ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র হাতে থাকা কয়েকজনের ছবি দেখিয়ে চিনি কি না জানতে চেয়েছেন। তাদের কাউকেই আমি চিনি না।যাদের চিনতে পেরেছি তারা আমাদের বিপ্লবী সহযোদ্ধা, তাদের হাতে কোন অস্ত্র ছিলো না। এর মধ্যেই সামনের সারিতে আমাদের সাথে থাকা এক ভাইয়ের ছবি দেখিয়ে বল্লো তাকে রাতেই ধরিয়ে দিতে হবে,আমি যতদূর জানি সেই ভাইকে তারা খুব ভালো করেই চিনতো।আমাকে কল করার জন্য বলে, এমন অবস্থায় আমার ফোনের চার্জ শেষ হয়ে অফ হয়ে যায়।

‎তাদের বেরিগেড এর প্রান্তে দাড়িয়ে ছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর জেলা আহবায়ক ইমরান ভাই, তখন তাকে ডেকে নেওয়া হয় এবং কল করতে বলা হয়।

‎জেনারেল মহেদয় তাদের কেন সাংকেতিক এপ্রোচ বুঝালে ১০/১২ জন লাঠি নিয়ে একদম এলার্ট হয়ে যায়, ইমরান ভাই সুক্ষ দৃষ্টিতে একটা লাঠির দিকে তাকিয়ে আছে, হয়তো মনে মনে ভাবছিলো হাড্ডির কি অবস্থা হতে পারে। আমি চিন্তা করছিলাম লাল হবে না কালো কারবে।

‎জেনারেল মহোদয় দুজনকেই বুঝাচ্ছিলেন আমাদের সাথে যারা ছিলো রাতেই তাদের লাগবে, তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে।

‎আমি যখন বল্লাম জাতীয় পার্টি আমাদের উপর হামলা করেছিলো প্রথম, এই ফুটেজ গুলো কালেক্ট করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুন, তখন তিনি ফুটেজ চেয়েছিলেন। সেই সময়ে আমার মনে হয়েছিলো তাদের কাছে কি আসলেই নেই।

‎বলে রাখি জেনারেল মহোদয় একটু ভাড়ি গলায় কথা বল্লেও খারাপ বিহেব করেন নি, যখন আমাদের দুজনকে গাড়িতে তোলার জন্য বলা হয়েছিল, তখন অফিসার কে ডেকে বলেছিলে “দে আর লিডার”, তার কনসার্ন ছাড়া আমাদের সাথে যেন কেউ খারাপ ব্যবহার না করে।

‎মূল ঘটনা মোটামুটি এটাই, আর আমাদের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছিলেন, আমাদের যারা ছিল তাদেরকে তোলার জন্য বলেছিলেন। এবং একটু পরেই আমরা দেখি যে বিএনপির মহানগর আহবায়ক সামু আঙ্কেল,সদস্য সচিব ডন ভাই, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব লাকু আঙ্কেল তাদেরকেও ডেকে আনা হয়েছে কথা বলার জন্য।
‎এর আগে আমাদের দুজনের মোবাইল ফোন নিয়ে নিয়েছিলো এবং আমাকে ও ইমরান ভাইকে আলাদা আলাদা গাড়িতে উঠানো হয়েছিল।

‎এক পর্যায়ে জানতে পারি আমাদের নেতা সার্জিস ভাই তিনি আমাদের জন্য রংপুরে আসতেছেন। এরপরে আর নিজের ভিতর কোন দ্বিধা কাজ করেনি।


‎এখানে একটা বিষয় না বললেই নয়, আমার খারাপ লাগে যে বিষয়টি ছিল জেনারেল স্যারের সাথে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো, এত রাতে ঘটনাটি এভাবে না হয়ে আমরা অফিসেও বসতে পারতাম। আওয়ামী লীগের কোন সন্ত্রাসীকে ধরতে একজন জেনারেল এভাবে অপারেশনে বের হয়েছেন বলে আগে কখনো শুনিনি যেটা গতকাল হয়েছে।

‎আবার এটাও লক্ষ্য করেছি বর্তমানে দোসর দল জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠনের সদস্য সচিব জনাব আরিফ আলী ওই সময় ঘটনায় উপস্থিত থেকে একজন মেজর সাহেবকে বিভিন্ন বিষয়ে উচ্ছ্বাসিত হয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছিছিলেন।

‎শেষে সামু আংকেল হাসির ছলে চা খেতে চাইলে তিনি চায়ের ব্যবস্থা করেন এবং আমরা চা খেতে খেতে তাদের সাথে এরকমই কথা হয়েছে, আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম আমরা আজকে একবার ক্যাম্পে তাদের সাথে দেখা করে আসবো এবং জেনারেল স্যারও আশ্বস্ত করেছেন আমাদের উপর হামলা চালানো ব্যক্তিদের তিনি ধরার চেষ্টা করবেন।

‎একটি বিষয় সাফ জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টির মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছিল। আওয়ামী লীগের পাপের ভাগীদার এই জাতীয় পার্টি,এবং এখনো তারা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। জাতীয় পার্টির কেউ যদি অস্ত্র নিয়ে রাজপথে নামে আমিও বুক পেতে দিয়ে রাজপথে নামবো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট