মোঃফয়সাল হোসেন খুলনা জেলা প্রতিনিধি :-
অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান! উপকূলীয় জনপদ কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের প্রান্তসীমা দিঘির পাড় এবার সরাসরি যুক্ত হচ্ছে খুলনার সাথে। আগামী ৪ মে ২০২৫ থেকে চালু হচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত খুলনা-কয়রা দিঘির পাড় সরাসরি গেটলক বাস সার্ভিস। এই ঘোষণা খুলনা জেলা বাস মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে আনন্দের ঢেউ তুলেছে। খুলনা- পাইকগাছা -কয়রা সড়কে চলাচলকারী পরিবহন শ্রমিকদের এই নতুন পথের যাত্রীদের সেবায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি কেবল একটি বাস সার্ভিস নয়, বরং দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নপূরণ। জানা যায়, কয়রাবাসীর নিরন্তর দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং কয়রা সদর ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এইচ এম শাহাবুদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই গেটলক সার্ভিসটি আলোর মুখ দেখছে। এতদিন খুলনা পর্যন্ত চলাচলকারী পাইকগাছার গেটলক গাড়িটি এখন থেকে সরাসরি দিঘির পাড় পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। পরিবহন দপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত সময়সূচী অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ৭টা ২ মিনিটে পাইকগাছা কাউন্টার থেকে গেটলক বাসটি খুলনার অভিমুখে যাত্রা করবে। একই দিনে, খুলনা থেকে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে ছেড়ে আসা গেটলক ট্রিপটি সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে পাইকগাছা পৌঁছানোর পর স্বল্প বিরতি নিয়ে পুনরায় দিঘির পাড়ের দিকে রওনা হবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের গেটলকটি লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। এই রুটের সকল গেটলক গাড়িকে অবশ্যই কয়রা সদর হয়ে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের দিঘির পাড় পর্যন্ত চলাচল করতে হবে, যা এই অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ নিশ্চিত করবে। এই অভাবনীয় উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত কয়রা সদর ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এইচ এ শাহাবুদ্দিন বলেন, “মিনি বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমেই এই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। খুলনা থেকে দিঘির পাড় পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস চালু হওয়ায় উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী এবং পার্শ্ববর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগরের মানুষ দীর্ঘদিনের যাতায়াতের কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।” এই নতুন গেটলক বাস সার্ভিস শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিই করবে না, বরং এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এখন থেকে খুলনা যাতায়াত হবে আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নে এক নতুন গতি সঞ্চার করবে। দিঘির পাড়ের মানুষ এখন বুক ভরা আশা নিয়ে ৪ মের দিকে তাকিয়ে আছে, কখন তাদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার চাকা অবশেষে ঘুরতে শুরু করবে।