পর্যটন শান্তির সোপান" এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় পালিত হয়েছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরিফিন বলেন- পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে যেকোনো বরাদ্দই আসবে তার পরিপূর্ণ ব্যবহার হবে। একটি টাকাও অপচয় হবেনা। এই টাকা বাংলাদেশের জনগনের টাকা। নতুন বাংলাদেশে মানুষের অধিকার সম্বন্ধে জানতে পারছে এবং প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। পর্যটনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পরিপূর্ণভাবে মাঠে কাজ করছে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন ও কুয়াকাটা পৌরসভার যৌথ আয়োজনে পৌরসভা চত্তর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে মিলিত হয়। সেখানে বীচ ক্লিনিং কার্যক্রম শেষে শোভাযাত্রাটি পর্যটন হলিডে হোমস চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
পর্যটন ইয়ুথ হল রুমে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পটুয়াখালী নবাগত জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এই কুয়াকাটাকে একটি আদর্শ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলবো। দেশি বিদেশী পর্যটক যারাই আসবেন তারা যেন বলতে পারেন কুয়াকাটা ভ্রমনে এসে পূর্ণ তৃপ্ত। এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। পর্যটন কেন্দ্রে কোনো লুটপাটকে আমরা সমর্থন দিবনা। যদি কেউ বিশৃংখলা ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। দেশে এখন অধিকার প্রতিষ্ঠা করার সময় এসেছে। আপনারা দীর্ঘ ১৬ বছরে অনেক নির্যাতিত হয়েছেন। অনেকেই নিজেরাই আইন অমান্য করে নানা কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। তাদের প্রতি আহ্ববান আপনারা আইনগত পথে হাটুন। এতে সময় লাগলেও আপনারা আপনাদের অধিকার ফিরে পাবেন।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম পর্যটনের সার্বিক নিরাপত্তা ও উন্নয়ন পরিকল্পনার বিষয়ে জানান, কুয়াকাটা-কলাপাড়া মহাসড়কের দীর্ঘদিনের পর্যটকের ভোগান্তি আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ সরকের কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে শেষ হলে পর্যটকরা দিন এবং রাতে বিনোদন সময় কাটাতে পারবে। সড়কে লাইটিং ব্যবস্থা সহ নান্দনিক সৌন্দর্য দিতে বিষেশ পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে ৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ ইতোমধ্যো ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে কুয়াকাটা থেকে সরাসরি নৌপথে সুন্দরবন ভ্রমনের সকল কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সভায় কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বে রামনাবাদ চ্যানেল পর্যন্ত ১২ কিমি. সৈকতে সৈকত রক্ষায়, মেরিন ড্রাইভ স্থাপনের একটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা পেশ করা হলে এতে জেলা প্রশাসক সমর্থন দেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক কৌশিক আহমেদ, টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজওয়ানের পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ, পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকার, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক জুয়েল রানা, কুয়াকাটা পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল আজিজ মুসল্লী প্রমূখ। এছাড়াও পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন, ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক), কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশন (কুটুম), কুয়াকাটা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কুয়াকাটা বয়েস ক্লাব, হোটেল মোটেল এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশন, ফিস ফ্রাই সমিতি, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, ট্যুরিস্ট বোর্ড মালিক সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার কয়েকশত মানুষ শোভাযাত্রা ও রেলীতে অংশ নেয়।
সভা শেষে কুয়াকাটা পর্যটন ভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়। www.Kuakata.gov.bd নামক এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হোটেল মোটেল রিসোর্ট বুকিং সহ কুয়াকাটার নানা বিষয় জানতে পারবেন পর্যটক দর্শনার্থীরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা কুয়াকাটা পর্যটন উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা রক্ষা, সেবা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে আলোকপাত করেন। এ সময় সকল পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে যার যার স্থান থেকে সহযোগিতার আহবান জানান পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক।
তবে এ বছর সাদামাটা ভাবে আয়োজন করায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয়রা জানান, কুয়াকাটা পর্যটনকে প্রমোট করতে বীচ ম্যানেজ কমিটি ও পর্যটন করপোরেশনের উদাসীনতাকে দ্বায়ী করেছেন তারা।
প্রকাশক ও সম্পাদক : জাহাঙ্গীর আলম বাবু
মোবাইল : ০১৭১১৩১১০৭৪-০১৫৫৬৮১৮৬৮০
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম শেওড়াপাড়া ইকবাল সরণি মিরপুর ঢাকা কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত